জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১২

নতুন বছর, নতুন প্রজন্মের নৈতিক কিছূ দায়িত্ব


আমাদের নতুন বছরে পুরানো হিসাব নিকাশ মিলিয়ে আবার নতুন পরিকল্পনা অবশ্য জরুরী, আমরা যদি প্রজন্মের উত্তরসূরী হিসেবে বিগত সময়ের হিসাব নিকাশ পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাবো স্বাধীনতা আমাদের বিরাট অর্জন, আমাদের বড় সাফল্য আমাদের নতুন এক ইতিহাস পৃথিবীর বুকে আমাদের বাংলাদেশ নামক মানচিত্র যেন বিশ্বের বুকে সাহসী পথচলার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি সে স্বাধীনতা আজ ৪০ বছরে পদার্পণ করেছে অর্থা তার যৌবন পেরিয়ে সে আজ অন্য কাতারে সামিল হচ্ছে এখন তার যৌবন এর স্বর্ণালী দিন গুলো ধরে রাখার দায়িত্ব নৈতিকতার দিক দিয়ে বর্তমান প্রজন্মের ওপর বর্তায়। আমরা নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতার সময়ে আমাদের জন্ম হয়নি সে কারণে হয়তবা আমরা অনেকে আক্ষেপ হয় যে আমরা যদি সে সময়ে জন্ম গ্রহণ করতাম তবে দেশের জন্য মাটির জন্য মায়ের জন্য আমার তাজা রক্ত দিয়ে ঢেলে দিতাম। সালাম বরকত রফিক জব্বার শফিউরের মত, হয়ত মুক্তিযোদ্ধার কাতারে সামিল হতাম। শহীদ হতাম তবে আবার কেহ আমরা আবেগ নিয়ে ৭১এর স্মৃতি বিজরিত টি-শার্ট পরে আমাদের চেতনার জানান দেই। তবে আমরা যদি সত্যি নিজেদেরকে নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতার স্ব-পক্ষের শক্তি হিসেবে ভাবি তবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হবে আমার মা মাটি দেশের ভালবাসায় উদ্দীপ্ত হয়ে তা রক্ষা করা। যে মা-বোনদের ইজ্জত আমার ভাইয়ের রক্তে অর্জিত যে স্বাধীনতা সেই স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকার দায়িত্ব আমাদের স্বেচ্ছায় স্ব-প্রনীদিত হয়ে নিজেকে নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের জায়গা করে নেয়া। যেহেতু স্বাধীনতার সময়ে আমরা ছিলাম না তাই আমরা কোন অবদান রাখতে পারিনী তাই আমরা স্বাধীনতা রক্ষার দীপ্ত শফ নিয়ে এগিয়ে চললে কিছুটা হলেও আমার মায়ের মন শান্তি পাবে। আজকে স্বাধীনতার চারদশক পার হলেও আমাদের ঘরে সুখ ফিরে আসেনি তাই আজ হিসেবের সময় এসেছে কেন আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত স্বাধীনতা আমাদেরকে স্বাধীনতার সুখ দিতে পারেনি। আজ যে মা ভাষাকে ফিরিয়ে দিতে যে বোন তার অধিকারকে ফিরে পেতে স্বাধীনতা যুদ্ধ করে, সেই স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার পরে যখন দেখি সেই বোনরা আজও ধর্ষিত হচ্ছে ধর্ষণের সেঞ্চুরী পালন করা হয় হচ্ছে তখন আসলে আমরা যে স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছি সেটা পেয়েছি কিনা তা নিয়ে ভাবের উদ্রেক হয়। আজ যে যুবক সাহসী বেশে সারা বিশ্ব মাতাবে সে যখন মাদকাসক্ত হয়ে পরে থাকে আমাদের শিক্ষাঙ্গনে যখন আজ মাদকের ছড়াছড়ি। তখন হিসাব নিকাশ মিলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে যে আমাদের আগামীর দিন কি সম্ভাবনার হবে।

আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছেন শত্রু মুক্ত দেশ গড়ার জন্য স্বাধীনতার জন্য আর আমরা অনেকে মাদকের মুখে জীবন বিকিয়ে দিচ্ছি হিসেবে গড়মিল হয়ে যায় চিন্তার উদ্রেক হয় আমরা কি সেই ৭১ এর অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় সাহসী যুবকদের রক্তের ঋণের উত্তরসূরী হিসেবে বিশ্বাস ঘাতকতা করছি না। আজ যখন দেখি কেহ ডাস্টবিনে কুকুরের সাথে লড়াই করে তার খাবার খাচ্ছে শীতের দিনে তার নিজের শরীরকে আবৃত করার জন্য কাপড় পাচ্ছেনা অপর দিকে কেহ টাকা দিয়ে বালিশ বানাচ্ছে, বিদেশে যাচ্ছে হানিমুনে অযথাই কোটি কোটি টাকা খরচ করছে তখন মনে প্রশ্ন জাগে তাহলে কি অর্জিত স্বাধীনতা ধনী-গরীব বৈষম্যই রক্ষা করে চলবে। নাকি কোন নতুন মুক্তিযোদ্ধার মাধ্যমে আমরা আবার বাংলার সুখ ফিরে পাবো। আজ যখন আমার মা -বোনেরা মানুষরূপী জানোয়ার দ্বারা ইভটিজিং নামক হিংস্র আচরণ সহ্য করতে না পেরে প্রাণ দিচ্ছেন তখন নতুন করে ভাবাচ্ছে যে মা বোনেরা ৭১ জীবন-ইজ্জত দিয়েছেন সেটা কি আজিবনই দিতে হবে না সময়ের নতুন কোন মুক্তিযোদ্ধা জন্ম নিয়ে এদের হাত থেকে আমার বোন কে চলার স্বাধীনতা দিবে। আমার মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে যে হাসিতে স্বাধীনতার সুখ লক্ষ্য করা যাবে। আজকে আমার যে ভাইটি তার বাবার দুধ কলা বিক্রির টাকায় পড়ে ভার্সিটিতে পাড়ি জমাচ্ছেন তিনি যখন মাদকাসক্ত হয়ে কখনো বা লাশ হয়ে ফিরে আসছেন সেই দুঃখী বাবার কাছে তখন মনে হচ্ছে কি দরকার ছিল ক্যাম্পাস স্বাধীনতার যে স্বাধীনতা আমার সহজ সরল ভাইটিকে আজ সন্ত্রাসে, মাদকাসক্ত, সর্বশেষ লাশে পরিণত করলো যে স্বাধীনতা আজ তাকে উম্মাদ করে তুলছে সে আজ নেই অসহায় এর পাশে সে নেই দেশ গড়ার কাজে সে আজ মাদকের বলি হয়ে দেশটাকে আলো থেকে অন্ধকার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

আজ যখন স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক দল গুলোর বলির পাঠা হচ্ছে জনগণ তখন মনে হচ্ছে কি চাইলাম আর কি পাইলাম। আজ বিশ্বের দিকে তাকালে আমরা দেখি যে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোশিমা নাগাসাকি শহরে এটম বোমা ফেলল যার ধ্বংস যজ্ঞ আজও বর্তমান তার পরেও আজ জাপান যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজেদের প্রয়োজনে তাদের সম্পকের্র বন্ধন অটুট রেখেছে কিন্তু আমরা স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক দলগুলো জাতির বৃহত্তর কল্যাণের কোন কাজে ঐক্যমত্যে পৌছতে পারিনাই। আজ আমাদের রাজনৈতিক দল গুলোর বড় অভাব হলো তারা একে অপরের ভালো কাজকে স্বীকৃতি দিতে একেবারেই অপরগ যা আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় রেড সিগন্যাল। তাই এমত অবস্থায় নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধায় যারা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে চাই তাদের জন্য আহ্বান আসুন আমরা আমদের নতুন বছরের অনেক পরিকল্পনার সাথে নিচে উল্লেখিত পরিকল্পনা গুলো যোগ করে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় ব্রতি হই।

*
আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে দাড়াই সাধ্যমতো আমরা অনাথ শিশু বৃদ্ধ দেরকে সাহায্য করি

*
দেশের যত রকমের সম্পদ আছে এবং আমাদের বাংলাদেশের সীমানা আমাদের সকল প্রকার সীমানা সহ যে সরকারই আসুক না কেন তারা ভিনদেশীদের সাথে যে চুক্তি করে সে ব্যাপারে সজাগ থাকি।

*
দেশের ভালবাসায় উজ্জীবিত হয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০মিনিট দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে চিন্তা করি এবং বাংলাদেশ কে কিভাবে ঢেলে সাজিয়ে বিশ্বের শীর্ষে পৌছানো যায় সে জন্য আমাদের নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসি।

*
ইভটিজিং সহ নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে নিজ নিজ অঞ্চলে জনসচেতনতা গড়ে তুলি এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্ত মুলক লজ্জাজনক শাস্তির ব্যাবস্থা করি।

*
দলমত নির্বিশেষে যারা দেশের কল্যাণে কোন উন্নয়ন মূলক কর্মসূচী গ্রহন করে আমরা নতুন প্রজন্ম ঐক্যবদ্ধ ভাবে তাদেরকে সাহায্য করি

*
দেশীয় সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রসারের নিমিত্ত্বে কাজ করি ভীনদেশী সংস্কৃতি যেন আমাদের সংস্কৃতিকে কলুষিত না করে সে জন্য সজাগ থাকি

আমাদের সমাজকে ঢেলে সাজাবার জন্য আমরা নিজেরাই যথেষ্ট প্রয়োজন আমাদের পনের কোটি মানুষকে মানব সম্পদে পরিণত করা, তাহলেই সম্ভব আগামীর বাংলাদেশ যে বাংলাদেশ শুধু তার নিজেরই প্রয়োজন মিটাবেনা বরং সে বাংলাদেশ বিশ্বের সকল সমস্যাকে সমাধানের জন্য এগিয়ে আসবে। আর স্বপ্নকে সত্যি রূপে বাস্তবায়নই হোক আমাদের নতুন প্রজন্মের নতুন বছরের অঙ্গীকার।

লেখকঃ সাংবাদিক ছাত্র, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মওলানা ভাসানী হল, সাভার, ঢাকা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন